জাতীয়

গাজীপুরে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক
সংবাদ প্রকাশের জের ধরে গাজীপুর সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবের আইন বিষয়ক সম্পাদক, দৈনিক বাংলাদেশের আলো এবং দৈনিক পলয় পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মোঃ আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলার প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে মামলাটি প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনু্ষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (৭ এপ্রিল) গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন গাজীপুর সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবসহ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন এনএনবি ডেইলি নিউজের সম্পাদক জুলীয়াস চৌধুরী, দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি আবিদ হোসেন বুলবুল, গাজীপুর সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহাগ রহমান ও সভাপতি মোঃ আব্দুল ওয়াহাব রিংকো, দৈনিক মুক্তখবরের স্টাফ রিপোর্টার ওমর ফারুক সরকার, চ্যানেল এস এর গাজীপুর মহানগর প্রতিনিধি ও কোনাবাড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ সালাউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম, দৈনিক মুক্ত বলাকা পত্রিকার সহসম্পাদক তারেক রহমান জাহাঙ্গীর, গাজীপুর জেলা সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক সানাউল্লাহ নুরী,গাজীপুর সাংবাদিক ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাইউল উদ্দিন খান, চ্যানেল এস এর জেলা প্রতিনিধি মোঃ রফিকুল ইসলাম রফিক, দৈনিক এই বাংলা পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি নাছির উদ্দীন, দৈনিক জনবাণী পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি নাশিদ আহমেদ তুষারসহ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সদর থানার সাবেক ওসি রাফিউল করিম রাফি এবং এসআই মোঃ আবু ছাঈদে বিভাগীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্য কলাপের বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে একাধিকবার সাংবাদিক মোঃ আনোয়ার তার পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে। এছাড়াও হোটেল এক্স অপকর্ম এবং বনবিভাগের জায়গা থেকে অবৈধভাবে মাটি বিক্রির বিষয়ে সংবাদ প্রচার করায় হুমকি প্রদান করা হয়। একারণে এই সাংবাদিক সদর থানায় ২০২৪ সালের ৯ মে মাসে ৮৯৫ নং জিডি লিপিবদ্ধ করলেও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সাবেক ওসি রাফিউল করিম রাফি আনোয়ারকে মিথ্যা মামলায় জড়িত করতে ষড়যন্ত্র শুরু করে। গত রবিবার (২০২৪ সালের ১৯ মে) সন্ধ্যায় আনোয়ার তথ্য সংগ্রহ করতে রাজেন্দ্রপুর এলাকায় যায়। এসময় কিছু সন্ত্রাসী আনোয়ারের উপর হামলা করে। আনোয়ারের সহকর্মীরা ৯৯৯’এ ফোন করলে টহলরত এসআই আবু ছাঈদ আহত অবস্থায় আনোয়ারকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর আনোয়ারকে থানায় অমানবিক নির্যাতনের কারণে অসুস্থ হয়ে পরলে এই থানার সাবেক এসআই মোঃ মনিরুজ্জামানকে দিয়ে রাত পৌঁনে ৩ টার দিকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহম্মেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে এই সংবাদিকের বিরুদ্ধে ওসি সৈয়দ রাফিউল করিম (রাফি) জনৈক মোঃ ইব্রাহিমকে বাদী সাজিয়ে ১৮৬০ সালের দন্ডবিধি ৩২৩/৩৮৫/৩৮৬/৩৪ ধারায় সদর থানায় ৪০(৫)২০২৪ নং মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আনোয়ারকে ৩ দিনের রিমান্ডের আবেদনসহ গাজীপুরের আদালতে প্রেরণ করে। আনোয়ার এই মামলায় দেড় মাস জেল হাজতে থাকার পর আদালত তাকে জামিনের আদেশ প্রদান করেন। এরপর এই মামলার বাদীকে সাক্ষ্য প্রদান করার জন্য মামলার তদন্ত তদারকী কর্মকর্তা নোটিশ প্রেরণ করলে বাদী হাজির হয় নাই। অর্থাৎ এই মামলার ঘটনা মিথ্যা দেখে বাদী হাজির হয় না। এমনকি সদর থানার এসআই রাশেদুল হাসান গত ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী ১৪৭১ নং স্মারকে বাদী হাজির করণের নোটিশের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, “বাদী সদর থানা এলাকায় বসবাস করে না।” বাদী ইব্রাহীম যদি সদর থানা এলাকায় বসবাস না করে, তাহলে আনোয়ার কিভাবে তার কাছে চাঁদা দাবি করেছে? এই বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কৌশলে তথ্য প্রদান না করে তালবাহানা করছে। তাছাড়া একজন ভসমান ব্যক্তি দ্বারা এই মামলাটি রুজু করা হয়েছিল। সেই আলোকে, এই মামলার ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং অসত্য। এই মামলার দায় হইতে সাংবাদিক আনোয়ারকে অব্যহতি প্রদানসহ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা বন্ধ করতে আহবান জানান।
বক্তারা আরও বলেন, পুলিশ শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ড করলে বিচার করার জন্য পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আছে। কিন্তু সাংবাদিক যদি কোন অন্যায় করে বিচার করার জন্য প্রেস কাউন্সিল থাকা স্বত্তেও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয়। কারো দূর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করলে ক্ষুব্ধ হয়ে ফৌজদারি ও দন্ডবিধি আইনে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মামলা দেওযা বন্ধে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়। গণমাধ্যমকে স্বাধীন মত কাজ করলে পুলিশসহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে অনিয়ম দূর্নীতি অনেকাংশেই বন্ধ হবে। একারণে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের মিথ্যা মামলা দিয়ে দমিয়ে রাখার সংস্কৃতি পুরানো। সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি সাংবাদিকবৃন্দের।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button