গাজীপুরে পরকীয়ার জেরে রাতে যুবককে
বেধরক মারধর, সকালে আত্মহত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক:
পরকীয়ার জেরে রাতে যুবক-যুবতীকে বেধরক মারধরের ঘটনায় সকালে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে শাকিল নামের এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুর মহানগরের ২৪ নং ওয়ার্ড ফাউকাল এলাকায়। নিহত শাকিল আহমেদ (৩৫) চট্টগ্রাম সীতাকুন্ড এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১২ বছর আগে ফাউকাল এলাকার মৃত আজিজের মেয়ে আফরোজার সাথে শাকিলের বিয়ে হয়। তাদের ঘরে একটি পুত্র ও কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই ঘরজামাই হিসেবে শশুরবাড়িতে বসবাস করতেন শাকিল।
সরজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, স্থানীয় এডোয়ার্ড কোড়াইয়ার স্ত্রীর সাথে শাকিল আহমেদের দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া চলছিল। বিষয়টি গত কয়েকমাস আগে পারিবারক ভাবে জানাজানি হলে শাকিল তার পরিবার থেকে অন্যত্র চলে যায় এবং পরিবারের ভরণপোষণের দেয়া বন্ধ করে দেয়।
ঘটনার দিন ১লা মে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে শাকিল ও মৌসুমীকে একটি রুমে পরকীয়ায় লিপ্ত অবস্থায় হাতেনাতে আটক করে উভয়কে বেধরক মারধর করা হয়। এরপর এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দিলে শাকিল ও মৌসুমীকে উদ্ধার করে আপোষ মিমাংষা করে শাকিলকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়।
পরদিন অর্থাৎ শুক্রবার সকালে শাকিলের স্ত্রী আফরোজা শাকিলকে নাস্তা খাইয়ে অফিসে চলে যায়। পরবর্তী সকাল ১০টার দিকে সিগারেট জ্বালিয়ে গোসলখানায় প্রবেশ করেন শাকিল। এরপর গোসলখানা থেকে শাকিলের বের হতে দেরি হলে সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে শাকিলের মেয়ে তার মামিকে ডেকে গোসলখানার দরজা ধাক্কা দিয়ে দেখতে পায় শাকিল ওড়না পেচিয়ে ঘুলন্ত অবস্থায় রয়েছে।
পরে সদর থানা পুলিশকে খবর দিলে শাকিলের লাশ উদ্ধার এবং ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। পুলিশ জানায়, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শুক্রবার সকালে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে মৌসুমী গণমাধ্যমের কাছে বলেন, মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে মনির ও স্থানীয় জামাল রাতে ঘরে প্রবেশ করে আমাকে ও শাকিলকে বেধরক মারধর করেন। পরবর্তী মৃত আজিজের ছেলে মিন্টুও একাধিকবার ঘরের বাইরে বের করে মনির, জামাল ও মিন্টু দলবল নিয়ে আমাকে ও শাকিলকে মারধর করেন। মৌসুমী আরও বলেন, মিন্টু রাতের ঘটনা ধামাচাপা দিতে আমার কাছে ১লাখ টাকাও দাবী করেন।
মারধরে জড়িত মিন্টু বলেন, রাতে সাড়ে ১২ টার দিকে অফিস থেকে বাসায় ফিরে আসি। রাত পৌনে ১টার দিকে এলাকার স্থানীয় জামাল ও মনির আমাকে খবর দেয় যে মৌসুমী ও শাকিলকে পরকীয়া অবস্থায় হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের একসাথে দেখতে পাই। মিন্টু আরও বলেন, আমি ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই স্থানীয়রা তাদের মারধর করে। আমি কাউকে মারধর করি নাই। অন্যদিকে ঘটনা ধামাচাপা দিতে মৌসুমীর কাছে ১লাখ দাবীর কথা অস্বীকার করেন মিন্টু।