গাজীপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে জমির মালিককে হত্যা মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
গাজীপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে জমির মালিককে হত্যা মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন


গাজীপুরে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে জমির মালিককে হত্যা মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
স্টাফ রিপোর্টার
গাজীপুর মহানগরীর সদর থানা এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে জমির মালিক সজিব হোসেন তুহিনকে জুলাই আগস্টে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বাসন থানায় দায়েরকৃত একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। গত বুধবার ২১ই মে দুপুরে গাজীপুর সেন্ট্রাল প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় গ্রেফতারকৃত তুহিনের বড় বোন ফারহানা আক্তার সম্পা, তার মা সাজেদা পারভিন এবং তার স্ত্রী ফারজানা আক্তারের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভূক্তভোগী পরিবারের পক্ষে ফারহানা বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভূক্তভোগীরা অভিযোগ করে গণমাধ্যমকে জানান, গত ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল উনার বাবা মারা যাওয়ার পর স্থানীয় প্রভাবশালী ছাত্রলীগ নেতা সুমন চন্দ্র দাস পৈত্রিক সম্পত্তি ওয়ারিশানগণের নিজ নিজ নামে নামজারী করার কথা বলে প্রতারণামূলকভাবে কৌশলে সকল কাগজপত্র হাতিয়ে নেয়। এরপর গত ২০১৬ সালে দলিল লেখক ও সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসের অসাধু কর্মচারীদের সহযোগীতায় গ্রেফতারকৃত তুহিনসহ তার পরিবারের সদস্যদের সাক্ষর জাল করে ২ টি আমমোক্তারনামা দলিল রেজিষ্ট্রী করে ১৮৭ শতাংশ জমি জবরদখল ও আত্মসাৎ করার চেষ্টায় ভূমি দস্যু চক্রের নির্মম অত্যাচার ও নির্মম নির্যাতনের শিকার এই পরিবারের সদস্যরা। এই জাল আমমোক্তারকৃত ১৮৭ শতাংশ জমি থেকে এই প্রতারক সুমন তার স্ত্রী শ্রাবনী রানীর বরাবরে ৪১ ও তার বাবা নিখিল চন্দ্র দাসের ২৭শতাংশ জমি বিক্রি দেখিয়ে বেআইনি ভাবে জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে ৮ লক্ষ টাকার সরকারী কর ফাঁকি দিয়ে ২ টি সাফ কবলা দলিল রেজিষ্ট্রী করে দেয়। যাতে স্ত্রী ও বাবার মাধ্যমে জমি বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করতে সমস্যা না হয়। সেই সাথে উনাদের ভোগ দখলীয় জমি অবৈধ জবর দখল করার সুবিধার্থে জাল দলিল থেকে ভূমি দস্যু চক্রে অন্যান্য সদস্যকে এবং কথিত সৈরাচারী আওয়ামী দোসরদের নামে বিভিন্ন দলিল রেজিষ্ট্রী করে দেয়। এবিষয়ে পরিত্রাণ পেতে গাজীপুরের সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ২ টি জাল আমমোক্তারনামা দলিল বাতিলের লক্ষ্যে ৩৭৪/১৬ ও ২৮৭/১৮ নং দেওয়ানী এবং প্রতারনা, জাল জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অপরাধে চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৮৩/২০২৩ নং সিআর মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী। গাজীপুরের পিবিআই পুলিশ এবিষয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। বর্তমানে এই ৩ টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এর কারণে সুমনসহ ভূমি দস্যু চক্রের সদস্যরা ঘর বাড়ি থেকে গ্রেফতারকৃত তুহিনসহ তার পরিবারকে উচ্ছেদ করতে বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ির সামনের সব গাছ কেটে ফেলে। এসময় প্রতিবাদ ও বাধা প্রদান করলে উনাদেরকে মারপিট করে জায়গা সম্পত্তি দখল করতে সীমানা প্রাচীর দেওয়াল নির্মাণ করা শুরু করলে তুহিনসহ স্থানীয় আশপাশের পর লোকজন বাধা দিলে তুহিনের বিরুদ্ধে জিএমপি সদর থানার সাবেক ওসি সৈয়দ রাফিউল করিম রাফিকে ম্যানেজ করে মিথ্যা চাঁদা বাজির মামলা দায়ের করে ভূমিদস্যু চক্রের অন্যতম সদস্য হামিদ শিকদার। এঘটনায় কয়েকটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে চাঁদাবাজির অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তুহিনকে জামিনের আদেশ প্রদান করেন।
এরই মধ্যে জুলাই আগষ্ট বিপ্লব সংঘটিত হলে ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে আশার আলো দেখতে পাই ভুক্তভোগী পরিবারটি । কিন্তু নিমেষেই তা যেন পরিনত হয় নিরাশায়। ভূমি দস্যু চক্রে সকল সদস্যরা পালিয়ে গেলেও প্রতারক সুমন তার আওয়ামী মুখোষ পরিবর্তন করে বর্তমান ক্ষমতাশীল নেতাকর্মীসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় ভয়ংকর রুপে আদালতের আশপাশে হামলা চালিয়ে মামলা পরিচালনায় বাধা দেয় এবং সকল মামলা প্রত্যাহারের জন্য প্রতিনিয়ত ভয়ভীতি ও খুন জখমের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে গ্রেফতারকৃত তুহিনকে বাসন থানার মামলার দায় হতে অব্যাহতি (খালাস) প্রদানের সুব্যবস্থাসহ ন্যায় বিচারের স্বার্থে নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে ভূমিদস্যু চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন।